দ্বীনি শিক্ষার গুরুত্ব

স্টাফ রিপোর্টার:>>>

ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বৃহত্তর অংশ ধর্মীয় শিক্ষা অমূল্য, কিন্তু তাদের অনেকে ধর্মীয় শাসন মেনে চলেন। আমাদের দেশের সাধারণ মুসলমানদের এক বিরাট অংশ ধর্মীয় প্রাথমিক বিষয়গুলি সম্পর্কে অবহিত এবং ধর্ম-কর্ম পালন করতে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু বর্তমানে মুসলিম নারীর সন্তানদের বড় বড় ধর্মগ্রন্থের মত বড় হচ্ছে, অনুরূপ দরিদ্র শ্রমজীবী ​​মুসলমানদের অনেকে পড়াশোনা করার জন্য সুশিক্ষা হতে বিরত থাকে বিপথেও পরিচালিত হচ্ছে। তাদের অনেকে শিশু শ্রমিক হিসেবে বেড়ে উঠছে

ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি অন্নহা এবং যারা আধুনিক শিক্ষার প্রতি ধীরে ধীরে হচ্ছে, তাদের মধ্যে এমন আছে যারা মুসলিম পরিবারে সন্তানেরও হতে পারে ইসলামের অতি প্রয়োজনীয় প্রাথমিক বিষয়গুলি পর্যন্ত জানা যায় না। এ সম্পর্কে ব্যাখ্যা না করা যায় না, আমাদের দেশের বর্তমান প্রজন্মের এক উল্লেখযোগ্য অংশে মুসলিম শিশু হিসাবে পরিচিতি লাভ করা হয় অথচ ইসলাম সম্পর্কে তাদের প্রাথমিক ধারণাই তাদের নেই। এবপারে অভিভাবকদের দায়িত্ববোধ অভাবকেই প্রথমে দায়ী করা যায়। ধর্মীয় ক্ষেত্রে কমপক্ষে: তাদের যদি ন্যুনতম জ্ঞান দেওয়া হয় এবং ইসলাম ধর্মের অতি প্রয়োজনীয় করণীয় বিষয় গুলো শিক্ষা দানের ব্যবস্থা করা হয়, তবে বড় বড় বিপথে যাওয়া যায় না।

আবশ্যক প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা প্রত্যেক মুসলিম সন্তানের কর্তব্য এবং এ শিক্ষা দান করা বা সুযোগ প্রদান করা প্রতি পিতা-মাতা, প্রতিবন্ধক বাধ্যতামূলক দায়িত্ব ধর্মীয় শিক্ষার ধর্মীয় জ্ঞান লাভের উপর ইসলাম যে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে, কি কি আমরা সবাই জানি? কোরআন ও হাদিস এ জ্ঞান লাভ সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ। হজরত আলী (রা 🙂 এবং মহান সাহাবী হজরত মায়েজ ইবনে জাবাল (র 🙂 এর কিছু মূল্যবান উক্তি- বাণী উল্লেখ করা হয়, যা অনুসরণ যোগ্য।

‘মখনেনে আওলাক’ নামক গ্রন্থে একটি ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে যে, একদা দশজন লোক হযরত আলীর (রা 🙂 কদমতে উপস্থিত ছিলেন আরজ করেছিলেন; ‘হে আমিরুল মোমেনিন! আমরা আপনাকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে এসেছি করতে পারেন। আমরা আশা করি যে, আপনি আমাদের প্রতি তার ভিন্ন ভিন্ন উত্তর দিতে হবে ‘। তারা জিজ্ঞাসা; ‘হে আমিরুল মোমেনিন! জ্ঞান উত্তম, না ধন-সম্পদ? ‘

এই প্রশ্নের উত্তরে হজরত আলী (রা 🙂 বলেছেন; ‘1। জ্ঞান উত্তম, কেননা ধন-সম্পত্তির জন্য আপনি হিফাজত করতে পারেন, এবং জ্ঞান আপনার কাছে হেফাজতে করা থাক। ২। জ্ঞান উত্তম, কেননা ধন-সম্পত্তি ফেরাউন ও হামান উত্তরাধিকার, আর জ্ঞান নবীদের মীরাজ 3। জ্ঞান উত্তম, কেননা ধন-সম্পত্তি ব্যয় কম হলে কিন্তু জ্ঞান বিতরণ করলে উন্নতি সাধিত হয়। 4। জ্ঞান উত্তম, কেননা দেরী হলে মাল পুরান হয়ে যায়, অন্যদিকে জ্ঞান নেই কোন ক্ষতি হয় না। 5। জ্ঞান উত্তম, কেননা মালের জন্য সব সময় চোরের ভয় থাকে, কিন্তু জ্ঞানের জন্য কোন আশঙ্কা নেই।

6। জ্ঞান উত্তম, কেননা ধনী ব্যক্তি কিছু সময় কৃপণ বলে, কিন্তু জ্ঞানী ব্যক্তি কারী বা দাতা বলে। 7। জ্ঞান ভাল, কেননা জ্ঞান দ্বারা অন্তর আলোকিত হয়ে ওঠে, এবং মাল অন্তর অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তোলে। 8। জ্ঞান উত্তম, কেননা ধন-দৌলত প্রাচুর্যতার ফলে ফেরাউন প্রভূব-খোদায়ী দাবী করেছিল, কিন্তু জ্ঞান বড় হয়ে দরুন হজরত রাসুল করিম (সা 🙂 সর্বদা এ ধরনের কথা বলে, ‘মা আবাদনাকা হাক্কা ইবাদাতিকা’। অর্থাৎ (হে ঈশ্বর!) আমরা যথাযথভাবে আপনার উপযোগী এবাদত বন্দী করা হবে না। 9। জ্ঞান উত্তম, কেননা অর্থলভে অনেক শত্রু সৃষ্টি হয়। আর জ্ঞান দ্বারা জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে। 10। জ্ঞান ভাল, কারণ কেয়ামত দিবসে ধন-সম্পদের হিসাব দিতে হবে কিন্তু জ্ঞানের জন্য কোন হিসাব দিতে হবে না। ‘

হজরত মায়েদ ইবনে জাবাল (রা 🙂 বর্ণনা করেছেন; “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘1। দীনি শিক্ষা (জ্ঞান) অর্জন কর, ২। জ্ঞান লাভ করলে অন্তরে আল্লাহ ভয় জন্মে, 3 জ্ঞান অনুসন্ধান এবাদত স্বরূপ, 4। জ্ঞান চর্চা করা আল্লাহ পবিত্রতা বর্ণনা করা সমতুল্য, 5 জ্ঞান চর্চা করা জিহাদ স্বরূপ, 6। অজ্ঞান ব্যক্তিকে জ্ঞান শিক্ষা দান স্ব স্বরূপ, 7। প্রয়োজনের ক্ষেত্রে জ্ঞান বিতরণ পঠন কাজ, 8। জ্ঞান হালাল ও হারাম বস্তুকে চেনার প্রতীক স্বরূপ, 9 জ্ঞানী ব্যক্তিরা বেহেশতি এবং সৎ লোকেদের পথ দিশারী, 10। একাকী অবস্থায় জ্ঞান সাথী এবং দরিদ্র অবস্থায় বন্ধু, 11 জ্ঞান একাকী অবস্থায় আলাপী বন্ধু স্বরূপ, 1২ জ্ঞান সুখ ও দু: খের পথ প্রদর্শনকারী, 13 দসমনের মোকাবেলা জন্য জ্ঞান শক্তিশালী অস্ত্র, 14। বন্ধুরা বন্ধ জ্ঞান সৌন্দর্য, 15 আল্লাহ তায়ালা জ্ঞানের বদওলটে অধীন: পতিত জাতিগোষ্ঠীকে উন্নত করা এবং জ্ঞানীদের পথ প্রদর্শক ও নেতা মনোনীত করা, লোক তাদের অনুসরণ করে, 16। জ্ঞান অন্তর কালিমা দূর করে মানুষের মধ্যে মর্যাদা দান, 17। জ্ঞান অন্ধকারে আলো বিতরণ, 18 জ্ঞান মানুষকে দুনিয়া এবং আখেরাতে উচ্চ মর্যাদা অধিকারী, 19। জ্ঞান চর্চা করা রোজা রাখার মত পূটিয়ের কাজ, ২0 জ্ঞান অর্জন এবং বিতরণ করা রাত্রের এবাদত ন্যায়, ২1 জ্ঞান দ্বারা মানুষ আত্মীয় নীরব ব্যবহার করে শেখ এবং হালাল-হারাম চিনতে পারে, 22 আমল জ্ঞানের অধীনে এবং জ্ঞান আমল পথ প্রদর্শক স্বরূপ, ২3 সৎ লোকেদের জ্ঞান দান করা হয় এবং অসৎ লোকরা তা থেকে বিরত থাকে। (ইবনে আবদুল বার)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*