শিরোনাম

‘গলাকাটা’ পাসপোর্টের আর সুযোগ নেই: প্রধানমন্ত্রী

আগে পাসপোর্টের নামে মানুষের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করা হতো, এটাকে ‘গলাকাটা’ পাসপোর্ট বলা হতো। সেই পাসপোর্টের আর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ায় এখন আর পাসপোর্ট নিয়ে কাউকে ধোঁকায় পড়তে হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ই-পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে প্রকল্প ই-পাসপোর্টের জন্য গ্রহণ করেছি তাতে মনে করি, বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। কারণ আমরা যে পাসপোর্ট দিতে যাচ্ছি, সেটি বায়োমেট্রিক। এতে এম্বেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রো প্রসেসর চিপ থাকবে। সেখানে যে পাসপোর্ট গ্রহণ করবেন তার বায়োগ্রাফি ও বায়োমেট্রিক অর্থাৎ তার ছবি, ফিঙ্গার প্রিন্ট এবং চোখের কর্নিয়া থাকবে। কাজেই আর মানুষ ধোঁকায় পড়বে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশ এই আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন পাসপোর্ট গ্রহণ করেছে।  প্রায় ১১৮টি দেশে এটি চালু হয়ে গেছে। কাজেই বাংলাদেশ হলো ১১৯তম দেশ। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বপ্রথম বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট চালু করতে সক্ষম হয়েছে।’

ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করায় প্রধানমন্ত্রী ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

ই-পাসপোর্ট মুজিববর্ষে বাংলাদেশের মানুষের জন্য উপহার বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবো। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চাই। সে জন্যই ই-পাসপোর্ট।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের সরকার চায় বাংলাদেশ উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও আত্মমর্যাদাশীল হবে। আমরা অর্থনৈতিকভাবে আজকে এগিয়ে গেছি।  দেশের মানুষেরও আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে।  এখন অনেকেই বিদেশে মানুষ যায়। আমাদের প্রবাসীরা বিদেশিরা কাজ করে রেমিট্যান্স পাঠায় যা আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রেখেছে। কাজেই তারা দেন কোনো হয়রানির শিকার না হন সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যেকোনো উন্নয়নের সময় মাথায় রাখি তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ যেন সেই সেবাটি পায়। বাংলাদেশের জন্য যা যা প্রযোজ্য আমরা সেই সেবাই গ্রহণ করি।’ এ সময় তিনি জানান, সরকার ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে সেই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ডেল্টা প্লান ২১০০ এর মাধ্যমে। আগামী পর্যন্ত যেন উন্নত ও বাসযোগ্য একটি দেশ পায় সে লক্ষ্যেই তার সরকার কাজ করছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। ঢাকায় জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফাহরেনহোল্টস অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বহির্গমন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তার ই-পাসপোর্টটি হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ই-পাসপোর্ট ভবনের ফলক উন্মোচন করেন এবং এনরোলমেন্ট বুথ পরিদর্শন করেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং কূটনীতিক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র-(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/জেবি)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*